‘কাম্বলিকে বলেছিলাম মেয়েদের কাছে যেয়ো না, সে বলেছিল আমি কিং’


ভারতের সাবেক ক্রিকেটার বিনোদ কাম্বলি।
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার বিনোদ কাম্বলি।ইনস্টাগ্রাম/বিনোদ কাম্বলি

ভারতের ক্রিকেটে বড় আক্ষেপের নাম বিনোদ কাম্বলি। কেউ কেউ তাঁকে শচীন টেন্ডুলকারের চেয়েও প্রতিভাবান মনে করতেন, শুরুটাও ছিল বেশ আশাজাগানিয়া। কিন্তু টেন্ডুলকার ক্রিকেট–বিশ্বে সর্বকালের সেরাদের একজন হয়ে উঠলেও কাম্বলিকে এখনকার ভারতীয় সমর্থকদের অনেকেই হয়তো চেনেন না।

প্রথম চার টেস্টে দুটি ডাবল সেঞ্চুরি এবং টেস্টে দ্রুততম ১০০০ রানে পৌঁছানো ব্যাটসম্যানদের একজন হয়ে ওঠা কাম্বলি কীভাবে ক্রিকেট-দুনিয়া থেকে ধীরে ধীরে মুছে গেলেন, এবার সেটির কিছুটা উঠে এসেছে যোগরাজ সিংয়ের কথায়। ভারতের এই সাবেক ক্রিকেটার বলেছেন, কাম্বলিকে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন থেকে সরে আসতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু পরামর্শ পাত্তা না দিয়ে ঔদ্ধত্য দেখিয়ে কাম্বলি বলতেন, ‘আমি কিং।’

See More



কাম্বলি ও টেন্ডুলকার দুজনের বেড়ে ওঠা মুম্বাইয়ের একই স্কুল থেকে। ১৯৮৮ সালে মুম্বাইয়ের আজাদ ময়দানে হ্যারিস শিল্ড টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে সেন্ট জেভিয়ার্সের বিরুদ্ধে সারদাশ্রম বিদ্যামন্দিরের হয়ে তাঁরা দুজন তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬৬৪ রানের অপরাজিত জুটি গড়েছিলেন, যা সে সময় যেকোনো ধরনের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি ছিল।

বিনোদ কাম্বলি যখন মাঠ মাতাচ্ছিলেন।
বিনোদ কাম্বলি যখন মাঠ মাতাচ্ছিলেন।
ফাইল ছবি: এএফপি

এর পরের বছর টেন্ডুলকারের এবং ১৯৯১ সালে কাম্বলির আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়। টেন্ডুলকার ভারতের হয়ে ৬৬৪ ম্যাচ আর ৩৪,৩৫৭ রান নিয়ে মাথা উঁচু করে অবসর নিলেও কাম্বলির নীরব বিদায় ঘটেছে ১২১ ম্যাচ খেলেই, যার মাত্র ১৭টিই টেস্ট।

বিশ্বকাপ জেতা টেন্ডুলকার অবসর নিয়েছেন ২০১৩ সালে, কাম্বলি আটকে গেছেন সেই ২০০০ সালেই। যদিও তার আগেই দলে অনিয়মিত হয়ে পড়েছিলেন। ১৯৯৬ বিশ্বকাপের সময় কাম্বলি গভীর রাত পর্যন্ত পার্টি করতেন বলে চাউর আছে। নারী, মদ্যপান—এসবে জড়িয়ে মনোযোগ হারিয়ে ফেলেছিলেন ক্রিকেট মাঠে।

আরও পড়ুন

এবার ইনসাইডস্পোর্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যোগরাজ সিং জানিয়েছেন, কাম্বলির জীবনের ওই উদ্দাম সময়েই তাঁকে থামতে বলেছিলেন, ‘আমি একবার বিনোদ কাম্বলিকে বলেছিলাম, “এই পার্টি করা, সিগারেট খাওয়া, মেয়েদের কাছে যাওয়া—এসব বন্ধ করো। না হলে তুমি শেষ হয়ে যাবে। তোমাকে কাঁদতে হবে।”’

যোগরাজ সিং।
যোগরাজ সিং।
ইনস্টাগ্রাম/যোগরাজ সিং

চোটের কারণে মাত্র ২৭ বছর বয়সে খেলা ছেড়ে দিতে হয়েছে যোগরাজকে। ২০১১ সালে ভারতের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা অলরাউন্ডার যুবরাজ সিং তাঁর ছেলে। যোগরাজ ছিলেন পেস বোলার। ভারতের হয়ে ১৯৮০-৮১ সময়ে ১টি টেস্ট ও ৬টি ওয়ানডে খেলা যোগরাজ কাম্বলির সঙ্গে সেই কথোপকথনের বিষয়ে বলেন, ‘আমি তার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছিলাম, বেশ জোর দিয়েই। কিন্তু তখন সে বলল, “স্যার, আপনার সময় চলে গেছে। এটা গ্ল্যামার। আমি রাজা।” আসলে কেউ খেলার চেয়ে বড় নয়।’

অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে ক্যারিয়ার নষ্ট করা কাম্বলি সম্প্রতি চিকিৎসা-সহায়তা প্রসঙ্গে খবর হয়েছিলেন। বেশ কিছু স্বাস্থ্য সমস্যায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তাঁর চিকিৎসায় সহায়তার বাড়িয়ে দিয়েছিলেন ভারতের ১৯৮৩ বিশ্বকাপজয়ী দলের খেলোয়াড়েরা।

Comments

Popular Posts